সাতক্ষীরার ৫৪ লাখ টাকার বাঁকড়া সেতু ভেঙ্গে পড়েছে। সেতুটি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নে অবস্থিত। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে দুই পাশের কয়েক লাখ মানুষ। যানবাহন চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে কিছু মানুষ।
তবে এ ঘটনায় পরস্পরকে দায়ী করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মরিচ্চাপ নদীর ওপর বাকড়া এলাকায় ৬০ ফুট দৈর্ঘের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। প্রকল্পে ব্যয় হয় ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যথাযথভাবে সেতু নির্মাণ না করা ও চারপাশ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাটি কেটে নেওয়ায় তিন বছর আগে নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়েছে।
শোভনালী গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান জানান, সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয় আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নসহ আশপাশের ৪০টি গ্রামের কয়েক লাখ মানুষের। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়কের এই সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার মানুষ। ১২ দিন আগে আকস্মিক সেতুটি ধসে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। তবে ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে কিছু মানুষ।
ওই এলাকার শিক্ষার্থী বিলকিস নাহার বলেন, আগে ভ্যানে করে স্কুলে যেতে পারতাম। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এখন ২-৩ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হচ্ছে। আমরা দ্রুত এটি সংস্কারের দাবি করছি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার সেতুর চারপাশ থেকে মাটি কেটে নিয়েছেন। এছাড়াও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেতুটি যথাযথভাবে নির্মাণ করেননি।
তবে সেতুর চারপাশ থেকে মাটি কাটার কথা অস্বীকার করেন ঠিকাদারদের একজন কার্তিক দাস। তিনি বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করার কারণে এটি ভেঙে পড়েছে। আমরা দূর থেকে মাটি কেটেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, নদী খননের জন্য নয়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছড়াই নির্মাণ করার কারণে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। সেতুর ফাউন্ডেশন কম থাকায় এটি ভেঙে পড়েছে।
আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ খান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার গভীরভাবে নদী খনন করেছেন। এতে সেতুর নিচের মাটি সরে গেছে। সে কারণেই এটি ভেঙে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পরস্পরবিরোধী এমন বক্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, তাহলে কার ভুলে ভাঙল সেতুটি।