নীলফামারী সৈয়দপুরের কৃষক পরিবারের মেয়ে মারুফা আক্তার। বাবার সঙ্গে জমিতে চাষাবাদের কাজ করা সেই মারুফা এবার নিজের জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলে।
ষষ্ট শ্রেণিতে পাড়ার সময় ক্রিকেটের প্রতি তারা ভালো লাগা জন্ম নেয়। এরপর ছেলেদের সঙ্গে খেলতে শুরু করেন ক্রিকেট। আর এটাকে স্বপ্ন হিসেবে নিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন বিকেএসপিতে। খেলেছেন বিভিন্ন ক্লাবেও। কিন্তু করোনা মহামারি তার গতি রোধ করা চেষ্টা করে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে ক্রিকেট খেলা। ফলে বাবাকে সময় দিতে থাকে চাষাবাদে।
অভাব-অনটনের সংসারে তিন বেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই যেখানে সংগ্রামের মতো, সেখানে ক্রিকেট খেলাটা চালিয়ে যাওয়া অনেকটা বিলাসিতা মনে হয়েছিল মারুফা আক্তারের কাছে। স্বপ্ন দূরে সরিয়ে রেখে তাই বাবার সঙ্গে হালচাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নীলফামারী সৈয়দপুরের এই নারী ক্রিকেটার। কিন্তু বিসিবির সহযোগিতায় মারফার স্বপ্নে রংয়ের ছোয়া লাগে। ফিরে যান আগের ঠিকানা বিকেএসপিতে। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট হয়ে এবার জাতীয় দলের আঙিনায় পা রাখলেন তিনি।
জানা যায়, মারুফার কৃষিকাজের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনায় আসেন তিনি। ফলে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বছর না পেরোতেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক নৈপুণ্য দেখিয়ে ১৯ বছর বয়সেই ডাক পেলেন জাতীয় দলে। এমনকি টি-টোয়েন্টি নারী বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ১৫ সদস্যের দলে নতুন মুখ হিসেবে ডাক পান মারুফা।
এই খবরে মারুফার গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুরে বইছে আনন্দের বন্যা। আত্মীয়স্বজন এবং এলাকাবাসীর শুভেচ্ছা বার্তায় নিজেকে ধন্য মনে করছেন মারুফার কৃষক বাবা।
উল্লেখ্য, মারুফা বিকেএসপির হয়ে ১১ ম্যাচে ৩.২১ ইকোনমিতে ২৩ উইকেট নেন। এর মধ্যে এক ম্যাচেই নেন ৭ উইকেট। দারুণ বোলিংয়ের স্বীকৃতি হিসেবে জিতে নেন টুর্নামেন্টের ‘বেস্ট প্রমিজিং প্লেয়ার’- এর পুরস্কার। গত মাসে সিলেটে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি সংস্করণের জাতীয় লিগেও মুগ্ধতা ছড়ান মারুফা। চার-ছক্কার ফরম্যাট হলেও ৭ ম্যাচে মাত্র ২.৭৬ ইকোনমিতে ১৩ উইকেট নেন তিনি।