পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কালীবাড়ি খালের ওপর লোহার সেতুটি দেড় মাস ধরে ভেঙে পড়ে আছে। বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ভাঙার পর সেতুটি মেরামত না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে দুটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। সেতু ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসী ও ডকইয়ার্ডে কাজ করা শ্রমিকেরা খেয়া নৌকায় খাল পারাপার করছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের বরছাকাঠি গ্রাম ও সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের বালিহারী গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কালীবাড়ি খালের ওপর ১৬ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
৯২ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতুটি দিয়ে স্থানীয় লোকজন বরছাকাঠি এলাকার কাঠ বাজার ও মিয়ারহাট বাজারে যাতায়াত করেন। স্থানীয় কালীবাড়ি খালের তীরে গড়ে ওঠা ডকইয়ার্ডগুলোর শ্রমিকেরা সেতুটি দিয়ে চলাচল করেন। গত ১০ মার্চ বালুবাহী একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেতুটি একাংশ ভেঙে খালে পড়ে যায়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, লোহার সেতুটির দক্ষিণ প্রান্ত থেকে অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে আছে। লোকজন নৌকায় খাল পার হচ্ছে। খেয়া নৌকা পাওয়া না গেলে ডকইয়ার্ডের শ্রমিকেরা সাঁতার কেটে খাল পার হচ্ছেন।
উপজেলার বরছাকাঠি গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আতিক রহমান বলেন, সেতুটি দিয়ে বরছাকাঠি গ্রামের মানুষ সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের মিয়ারহাটে যাতায়াত করত। আবার সুটিয়াকাঠী ইউনিয়নের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা বরছাকাঠি কাঠ বাজার এবং শামসুন্নাহার হালিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আশরাফিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য সেতুটির ওপর নির্ভরশীল ছিল। সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর প্রতিদিন শত শত মানুষ খেয়া নৌকায় খাল পার হচ্ছে।
বরছাকাঠি শামসুন্নাহার হালিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফিজুর রহমান বলেন, কালীবাড়ি খাল পার হয়ে কয়েক শ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়া করে। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের এখন খেয়া নৌকায় খাল পার হতে হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ অথবা মেরামত করে চলাচলের ব্যবস্থা করা উচিত।
কালীবাড়ি খাল দিয়ে প্রতিদিন বালুবাহী বাল্কহেড ও পণ্যবাহী কার্গোসহ অনেক নৌযান চলাচল করে। নৌযানের ধাক্কায় লোহার সেতুর খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য এখানে একটি গার্ডার সেতু নির্মাণ করার দাবি স্থানীয় লোকজনের।
নেছারাবাদ উপজেলা প্রকৌশলী শেখ তৌফিক আজিজ বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে এডিবির অর্থায়নে সেতুটি মেরামত করার কথা রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে দ্রুত সেতুটি মেরামত করা হবে।